ইলন মাস্কের নতুন উদ্ভাবনের ব্যাপারে জানি, ইলন মাস্ক কতটা উদ্ভাবনী। স্পেসএক্স থেকে টেসলা, তিনি সবসময়ই আমাদের অবাক করে দেন। এই তো মাত্র কিছুদিন আগে যা ছিল মানুষের কল্পনার বাইরে সেই ফিরতি মহাকাশ যানকে খরচ কমাতে পৃথীবির আকাশে ক্যাচ করে পূণরায় ব্যবহার উপযোগী করে বৈজ্ঞানিক বিপ্লব স্থাপন করেন। এবার তিনি নিয়ে এসেছেন এক নতুন উদ্ভাবন, যা স্মার্টফোনের দুনিয়াতে বিপ্লব ঘটাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই নতুন ফোনটির নাম হলো টেসলা পাই। এমন সব দুর্দান্ত ফিচার রয়েছে এই ফোন টিতে যা হতবাক করে দেবে পৃথীবির তাবৎ হোমড়া চোমড়া ফোন কোম্পানী গুলোকে।
আসুন দেখা যাক কি আছে ইলন মাস্কের নতুন এই ফোনে।

ইলন মাস্কের নতুন উদ্ভাবন কৃত পাই ফোন আসলে কি?
টেসলা পাই ফোন শুধু একটি স্মার্টফোন নয়, এটি একটি প্রযুক্তির অভিনব সংমিশ্রণ। প্রযুক্তির দিক দিয়ে এটি থাকবে সবচেয়ে এগিয়ে আজ পর্যন্ত কোনো ফোনই এমন ফিচার দিতে পারেনি। (PI) পাই ফোন পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গন্ডি পেরিয়ে বিস্তার লাভ করবে মহাকাশেও এমন টাই ধারণা দিয়েছেন স্বয়ং ইলন মাস্ক।
যা যা থাকছে ইলন মাস্কের এই ফোনে
সৌরশক্তি: এই ফোনে রয়েছে উন্নত প্রযুক্তির সোলার প্যানেল সিস্টেম যা সূর্যের আলো থেকে ব্যাটারিকে অনবরত চার্জ করবে। তাই আপনাকে আর চার্জের ব্যাপারে মাথা ঘামাতে হবেনা। যেকোনো জায়গায় নিবিঘ্নে চলাফেরা করা যাবে যা বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয় একটি ব্যাপার হতে চলেছে এটি বলাই বাহুল্য।
স্যাটেলাইট কানেক্টিভিটি: আমরা একসময় বিভিন্ন থ্রিলার ও স্পাই মুভিতে দেখে আসছিলাম স্যাটেলাইট ফোনের ব্যবহার, তবে ইলন মাস্কের নতুন উদ্ভাবন এর বদৌলতে এবার কেবল স্পাই ই নয় সাধারণ মানুষ ও এই সুবিধা ভোগ করতে পারবে ইচ্ছে মত। কারণ এই ফোনে থাকবে সরাসরি স্যাটেলাইটের সাথে সংযোগ স্থাপনের ব্যবস্থা, বিশেষ এই ফিচারের কারণে টেসলা পাই থেকে করা যাবে আর্থ টু আর্থ রোমিং কল । যার ফলে দূরবর্তী এলাকায়ও আপনি ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন স্বাচ্ছ্যন্দে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা: সবচেয়ে চমকপ্রদ যেই ব্যাপারটি রয়েছে টেসলা পাই এ তা হলো এই ফোনে যোগ করা হয়েছে ৫ম প্রজন্মের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, যা আইফোনের সিরি অথবা মাইক্রোসফট এর করটানার থেকে অনেক বেশী অভিনব। অনেকটা আয়রন ম্যান মুভির জারভিসের মতো। যে আপনার সাথে কথা বলতে পারবে সাধারণ মানব সহকারীর মতই, এবং, আপনার বিভিন্ন কাজে সহযোগীতা করতে পারবে ও আপনার পছন্দ বুঝতে পারবে।
কিছু বাড়তি কিছু ফিচারসঃ

নিউরোলিংকঃ টেসলার এই স্মার্টফোন পরিচালিত হবে আপনার চিন্তার মাধ্যমে যা সায়েন্স ফিকশনের কোনো ঘটোনার মতই মনে হবে। টেসলা ফোনটিতে থাকছে নিউরোলিংক সুবিধা। নিউরোলিংক হলো সেই প্রযুক্তি যার সাহায্যে মানব মস্তিষ্কের সাথে সংযোগ ঘটানো সম্ভব হবে টেসলা পাই এর প্রসেসর এর।অর্থাৎ আপনার চিন্তা অনুসারে ফোন কাজ করবে, কোনোরকম স্পর্শ ছাড়াই করতে পারবেন সবকিছু।
এছাড়াও ফোনটিতে থাকছে ফোরকে লেভেল ৬.৫ ইঞ্চির সুপার আল্ট্রা ফোর-কে স্ক্রিন। পারফরম্যান্সের জন্য ব্যাপক জনপ্রিয় স্ন্যাপড্রাগন ৮৯৮ প্রসেসর দ্বারা চালিত হবে এই বিস্ময়কর ফোনটি। এই প্রসেসর কানেক্ট করা থাকবে ২ টেরাবাইটের হিউজ স্টোরেজ ক্যাপাসিটির সঙ্গে। মনে হতে পারে একটি ছোটোখাটো সুপার কম্পিউটার হাতের মুঠোয় নিয়ে ঘুরছেন।
ফাইভ-জি প্রযুক্তি সম্বলিত স্যাটেলাইট ফোনটি হবে অন্যতম চমক। অর্থাৎ মহাকাশে বস্থান কৃত স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পৃথীবির যে কোনো স্থান এবং পরিবেশে ব্যবহার করা যাবে ইন্টারনেট পরিষেবা। স্যাটেলাইট ফোনটির সবচেয়ে বড় সুবিধা হবে এটির নেটওয়ার্ক সকল জায়গাতেই উপলভ্য স্থানের কোনো ভেদাভেদ নেই। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্গমতম স্থানেও থাকবে বহাল তবিয়তে।
অত্যাধুনিক ক্যামেরাঃ এও জানা গেছে টেসলা পাই এর পেছনে থাকবে ৪ লেন্স সম্বলিত ১০৮ মেগাপিক্সেল এর ক্যামেরা। এই ফোনে রাতের অন্ধকার আকাশের তারা ভরা ছবি তোলা যাবে কোনো রকম এক্সপোজার এবং স্পেশাল লেন্সের ব্যবহার ছাড়াই। ফোনের ক্যামেরায় ব্যবহৃত উন্নত প্রযুক্তি আর ফোনের পিছনে বিশেষ ভাবে দেয়া ফটোক্রোমিক প্রলেপের কারণে সূর্যের আলোর প্রতিফলনে বদলে যাবে রং। এছাড়াও টেসলার সোলার প্যানেলের সাহায্য কাজে লাগিয়ে টেসলা পাই ফোনে চার্জও দেয়া যাবে নির্বিঘ্নে
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইলন মাস্কের নতুন উদ্ভাবন
বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অনেক এলাকায় এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বেশ শোচণীয় পযায়ে রয়েছে, যেখানে অনেক বেশী লোড-শেডিং হয়ে থাকে এবং ইন্টারনেট সংযোগ আরও সীমিত। তাই এই ফোন তৈরী হলে বাংলাদেশের এসব এলাকার মানুষের জন্য একটি বিরাট উপহার হতে পারে।
আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যঃ

আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি তে না এলেও শোনা যাচ্ছে ৮০০-১২০০ ডলার হতে পারে ইলন মাস্কের এই ফোনটি। বাংলাদেশী টাকায় যা দাঁড়ায় প্রায় ৯৫,০০০-১,৪০,০০০ টাকা। এতো ফিচার এবং প্রযুক্তির ব্যাবহারের দরুন আমার মনে হয়নি ফোনটির দাম অতিরঞ্জিত করা হয়েছে।