দৈত্যাকার কলাগাছ- 1 great giant exsists

5/5 - (1 vote)

দৈত্যাকার কলাগাছের আবিস্কারঃ

আমরা সবাই কলা খেতে বেশ পছন্দ করি, কলা খেতে চায়না এমন মানুষ খুবই কম দেখা যায়। কলা পাকলে যেমন ফল হিসেবে খাওয়া হয় তেমনি আবার নাস্তার টেবিল যেন কলা ছাড়া জমেই না। আবার কাচা কলা সবজি হিসেবে তরকারী তেও খাওয়া হয়ে থাকে। তাই আমরা সবাই কলা এবং কলা গাছের সঙ্গে বেশ ভালোভাবে পরিচিত। তবে সে কলাগাছ যদি হয় ৯৮ ফুট লম্বা এবং ১৬ ফুট ব্যাসের তাহলে কি আপনি অবাক হবেন?

হ্যাঁ অবাক হওয়ারই কথা কিন্তু পাপুয়া নিউগিনিতে এটা নিতান্তই সাধারণ ব্যাপার। পাপুয়া নিউগিনি দ্বীপে মুসা ইনজেনস নামের এই কলাগাছ গুলো এমন দৈত্যাকার আকৃতির হয়ে থাকে। ১৯৫৪ সালের প্রথম এই গাছটি মানুষের চোখে পড়ে এবং এর নামকরণ করা হয়। দৈত্যাকার এই কলাগাছের পাশে দাড়ালে জীরাফকেও শিশু বলে মনে হবে।

আবিষ্কারের পর সারাবিশ্বে হৈচৈ ফেলে দেয় দৈত্যাকার আকৃতির এই কলাগাছটি। এর একেকটি কলার সাইজ এক ফুটেরও বেশী হয়ে থাকে। আর মোটা হয়ে থাকে মানুষের বাহুর মতো। আমরা অনেকেই হয়তো এখনোও এর সম্পর্কে জানিনা চলুন শুনে নেয়া যাক আর কি কি বৈশিষ্ট্য রয়েছে এই দৈত্যাকার এই কলা গাছের।

দৈত্যাকার

image creadit https://www.inaturalist.org/observations/194262859

দৈত্যাকার কলাগাছ-মুসা ইনজেনসঃ

যা দৈত্যাকার পাহাড়ি কলা বা ওএম নামেও বেশ পরিচিত এই কলা সর্ব প্রথম পাওয়া যায় পাপুয়া নিউগিনির পাহাড়ি জংগলে।

ইন্দোনেশিয়ার আরফাক মাউন্টেন রিজেন্সি তে গ্রীষ্মমন্ডলীয় পাহাড়ী বনাঞ্চলে বেড়ে ওঠা এই দৈত্যাকার কলাগাছ সচরাচর দেখা যায়। এই কলাগাছের কান্ড সাধারণত ১৫ মিটার বা ৪৯ ফুট পর্যন্ত উচ্চতার হয়ে থাকে। পাতা গুলোর দৈর্ঘ্য হয়ে থাকে ২০ ফুটের কাছাকাছি। গাছটির ব্যাস হয়ে থাকে ১৪-১৬ ফুট।

দৈত্যাকার এই গাছে কলা আসার পরে একেকটি কলার ওজন হতে পারে ৫৫-৬০ কেজি এবং লম্বায় ১৮-২০ সেন্টিমিটার হতে পারে। এই কলা বেশ সুস্বাদু হয়ে থাকে। প্রতি বছর ইন্দোনেশিয়ান টুরিস্টের বেশ বড় একটি অংশ নিউগিতে আসে কেবল মাত্র আকাশ ছোয়া এই কলাগাছ দেখার জন্য।

দৈত্যাকার কলাগাছ নিয়ে বিজ্ঞানীদের মতামতঃ

পৃথিবীতে যে কত বিষয় আমাদের অজানা রয়ে গেছে তার একটি বাস্তব উদাহরণ হচ্ছে মুসা ইনজেনস নামক অসম্ভব বড় আকৃতির এই কলাগাছ এতদিন অনাবিস্কৃত রয়েছিলো।

বিজ্ঞানীরা এই গাছ নিয়ে বিস্তর গবেষণা করে জানিয়েছেন যে এই গাছের জন্ম প্রাগৈতিহাসিক সময়ে। আফ্রিকার বিশাল বাওবাব গাছের মতো এই গাছটিও অনেক সময় ধরে পৃথিবীর বুকে অবস্থান করছে। বর্তমানে এই গাছটি বিলুপ্ত প্রায়। অনেক মানুষ কৌতুহল বশত এই গাছটির অনেক ক্ষতি করে ফেলে। তাই সরকারী ভাবে এই গাছ রক্ষায় বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

কিভাবে এই কলা এত বড় হলোঃ

photo credit: www.alamy.com

এই প্রশ্নের উত্তরে বিজ্ঞানীরা মনে করেন পাপুয়া নিউগিনির আবহাওয়া পরিবেশ এবং মাটি এই গাছের বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এখানকার উষ্ণ পাহাড়ী আবহাওয়া, প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত এবং পুষ্টিকর উর্বর মাটি এই গাছকে এত বড় হতে সাহায্য করেছে।

এছাড়াও প্রাগৈতিহাসিক অন্যান্য জীব ও উদ্ভিদের মতো হয়ত অজানা কোনো কারণে এই গাছটিও এর বিশাল আকার পেয়েছে বলে অনেকেই মনে করে থাকেন।

এই বিশাল কলা গাছের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অনেক জল্পনা কল্পনা রয়েছে। এই গাছকে বিলুপ্তির হাতে থেকে বাচাতে কি করা হবে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। যদিও বিজ্ঞানীরা বিশাল এই গাছের উপর তাদের গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা আশা করছেন যে, বিশাল এই গাছ থেকে নতুন ও উন্নত জাতের কলা উদ্ভাবন করা সম্ভব হবে।

আমাদের জন্য শিক্ষা:

বিশাল এই কলাগাছ যেমন আমাদের কাছে অপার বিস্ময় হয়ে ধরা দিয়েছে তেমনি কত বিস্ময়কর প্রাকৃতিক উপহার আমাদের নাগালের বাইরে রয়ে গেছে তার হিসেব নেই। প্রকৃতির মহান ও অভূতপূর্ব উপহার গুলির মধ্য এই বিশাল কলাগাছ একটি। এরকম হাজারো জিনিস আমরা মানুষের নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য এবং অসৎ উদ্দেশ্য পূরণের জন্য আদিম কাল থেকেই ধ্বংসের অনুষ্ঠানে মেতে রয়েছে।

তবে আমাদের ভালোর জন্য আমরা পৃথীবি টাকে কলকারখানার ভাগাড়ে পরিণত করে ফেলেছি। প্লাস্টিকের ব্যবহার, ৫জি নেটওয়ার্ক সংযোগ, ইট ভাটার কালো ধোয়া ইত্যাদি হাজারো রকম কারণে পৃথিবী আজ ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে।

আর একসময় এমনি ভাবে আমরা নিজেরাও নিজেদের কে সম্পূর্ণ রুপে ধ্বংস করে ফেলব। তাই সময় থাকতে আমাদের এই নীলাভ গ্রহ রক্ষায় আমাদেরকেই সোচ্চার হতে হবে।

বিঃদ্রঃ: যদি কখনোও পাপুয়া নিউগিতিতে বেড়াতে যান তাহলে এই কলা দেখতে ভূলবেন না। আর খেতে কেমন সেটাও জানাবেন।

photo credit

Leave a Comment