ভালো ঘুম ও পর্যাপ্ত আমাদেরে জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও মানুষের সবচেয়ে প্রিয় জিনিস হচ্ছে ঘুম। এমন কোনো মানুষ খুজে পাওয়া দুস্কর যে ঘুম পছন্দ করে না। মানুষের শরীরের জন্য ঘুম বিশেষ ভাবে প্রয়োজনীয়।
কথায় বলে মানুষ খাবার ছাড়া থাকতে পারে, বাসস্থান ছাড়া থাকতে থাকতে পারে তবে ঘুম ছাড়া থাকতে পারেনা। ভালো ঘুম মানুষের শরীর ও মনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভালো ঘুম না হলে শরীর ধিরে ধিরে ক্লান্ত হতে থাকে, মন মেজাজ খারাপ থাকে এবং দৈনন্দিন কাজ কর্মে মনোযোগ কমে যায়। তাই ভালো ঘুমের জন্য বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরী।
বর্তমানে মানুষ ব্যস্ততম জীবন যাপন করে, ব্যাস্ততার কারণে অনেকেই ভালো মতো ঘুমাতে পারেন না। এজন্য অনেকেই প্রতিদিনের জীবনে অসুস্থতা সহ আরও অনেক সমস্যা বোধ করেন। তবে সামান্য কিছু সহজ ও কার্যকর টিপস অনুসরণ করে আপনিও নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবেন। আসুন জেনে নিই সেই ৭টি টিপস:

১. ভালো ঘুমের জন্যঃ নিয়মিত ঘুমের সময়সূচি:
প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস করা এবং নিদিরষ্ট সময়ে ঘুম থেকে উঠে পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। রোজ রোজ সময় মতো ঘুমাতে যাওয়া একটি বিশেষ গুণ যা আপনার জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
সময় মতো ঘুমালে আপনার শরীরের জৈবিক চক্রকে সচল রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন অন্ত্যত ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো একজন সুস্থ্য সবল মানুষের জন্য প্রয়োজন। এছাড়াও আমরা অনেকেই সপ্তাহের ছুটির দিনে একটু বেলা করে ঘুম থেকে উঠে থাকি। কারণ আমরা মনে করি সপ্তাহে একটা দিনই তো ছুটি পাই একটু ঘুমিয়ে নিই। কিন্তু এটা একদম ঠিক নয়।
কারণ ছুটির দিনে বেশী ঘুমালে প্রতিদিনের ঘুমের অভ্যাসে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। যা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই সপ্তাহের ছুটির দিন গুলোতে নিদিষ্ট সময়ে উঠে পড়ার চেষ্টা করুন।
২. ভালো ঘুমের জন্যঃ ঘুমের পরিবেশ:
রুটিন মেনে ঘুমানোর পরেই যে বিষয়টি আসে সেটি হলো ঘুমের জন্য ভালো এবং সঠিক পরিবেশ নির্ধারণ।আমরা অনেকেই ঘুমানোর ক্ষেত্রে যেই ভূলটি করে থাকি তা হলো ঘুমের সময় আমরা রুমের লাইট জ্বালিয়ে রাখি। এতে সামান্য শব্দে কিংবা বিনা কারণে ঘুম ভেঙ্গে যায়।
এরপর ভালো ঘুমের জন্য আরামদায়ক বিছানা থাকা বেশ জরুরী। আরামদায়ক বিছানায় নরম বালিশে মাথা রেখে ঘুমালে অনেক ভালো ঘুম হয়ে থাকে। এরপর আপনি চাইলে আরও একটি কাজ করতে পারেন যেমন রুমের তাপমাত্রার দিকে বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখতে পারেন। তাপমাত্রা যেন খুব বেশি না হয় আবার খুব কমও না হয়। আরামদায়ক তাপমাত্রা থাকলে ভালো ঘুম হতে পারে।

৩. ভালো ঘুমের জন্যঃ দিনের বেলায় এক্টিভ থাকুন:
বর্তমানে প্রযুক্তি সব হাতের মুঠোয় এনে দিলেও আমাদের কে বানিয়েছে অলস। আমরা যখন সারাদিনের অফিশিয়াল কাজ ঘরে বসে বসে করতে থাকি আমাদের শরীর আনফিট হয়ে যায়। সারাদিন বসে বসে থাকার কারণে রাতের বেলা আমাদের ঘুম আসতে চায়না।
এজন্য দিনের সব কাজের ফাকে ফাকে আমাদের শরীরচর্চা করা উচিত। এছাড়াও সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে জগিং করা কিঙ্গবা বিকালে হাটতে যাবার অভ্যেস করা ভালো। এতে করে আমাদের শরীরের মধ্যকার জড়তা দূর হয়ে যায়। হার্ট ভালোভাবে রক্ত সঞ্চালন করতে পারে। এতে শরীরে ঘুমের জন্য চাহিদা তৈরী হয়।
মোট কথা আমাদের লাইফ স্টাইল যেমনি হোক না কেন আমাদের পর্যাপ্ত ঘুমানোর জন্য কায়িক পরিশ্রম করতে হবে। শরীর যত ক্লান্ত হবে এর তত আরামের প্রয়োজন হবে এবং তত ভালো ঘুম হবে।
৪. ভালো ঘুমের জন্যঃ ভালো খাদ্যাভ্যাস:
রাতে ভালো ঘুম হবার জন্য খাদ্যাভাসের ভূমিকা অনেক বেশী। যেমন রাতের খাবার হওয়া উচিত হালকা ও সহজে হজম যোগ্য। অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। তেল যুক্ত খাবার বেশি খেলে রক্তে কোলেস্টরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এর জন্য হার্টের দুরবলতা, উচ্চ রক্তচাপ এসিডিটি ইত্যাদি সমস্যা হয়ে থাকে। এজন্য তেল যুক্ত খাবার ত্যাগ করা প্রয়োজন।
এছাড়াও চিনি যুক্ত খাবার পরিহার করা উত্তম। বেশি পরিমাণে চিনি জাতীয় খাবার খেলেও অনেক রকম শারীরিক সমস্যা হতে পারে।
এবং ঘুমানোর আগে চা, কফি কিংবা এ জাতীয় পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। চা কফি কিংবা এলকোহল জাতীয় খাবার খেলে ঘুমের সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও আরেকটি চমকপ্রদ তথ্য হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা। সঠিক পরিমাণে পানি পান করলে আপনি ভালো ঘুমের সুফল পাবেন।
৫. ভালো ঘুমের জন্যঃ চিন্তামুক্ত থাকাঃ
আজকালকার সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো টেনশন বা দুশ্চিন্তা। নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত সকলেই কোনো না কোনো দুশ্চিন্তা করে থাকেন। দুশ্চিন্তা হলো এমন একটি অসুখ যার কোনো চিকিতসা নেই।
তবে আমরা কিছু মেডিটেশনের মাধ্যমে এবং যোগ ব্যায়াম করার মাধ্যমে চিন্তা মুক্ত থাকতে পারব। এছাড়াও অনেক কাউন্সেলিং সেন্টার রয়েছে চিন্তা কমানোর জন্য এরা সামান্য কিছু ফি নেয়ার মাধ্যমে আপনার উপকারে আসতে পারে।
ভালো ঘুমের জন্য উপরোক্ত টিপসগুলি অনুসরণ করলে আপনি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবেন। তবে সবার জন্য একই টিপস কার্যকর নাও হতে পারে। আপনার জন্য কোন টিপসগুলি কার্যকর, তা নিজে পরীক্ষা করে দেখুন।
বিঃদ্রঃ: এই নিবন্ধটি শুধুমাত্র তথ্যমূলক উদ্দেশ্যে। কোনো রোগের চিকিৎসা বা নির্ণয়ের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অবশ্যই নিন।
